পারিবারিক বিরোধের জের ও স্বামীর টাকা আত্মসাৎ করার জন্য অভিনব মৃ’ত্যুর ফাঁ’দ তৈরি করেছিলেন স্ত্রী।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাত দেড়টার দিকে শ্বশুর বাড়িতে পাওনা টাকা চাওয়ার জন্য আসেন ঠাণ্ডু বেপারী।
সন্ধ্যা রাতের দিকে কৌশলে তাকে দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ পান করান স্ত্রী।
তিনি ঘুমিয়ে পড়লে তাকে হ’ত্যা ও লা’শ গু’ম করতে অভিনব কায়দা তৈরি করেন শ্বশুর বাড়ির লোক জন।
পূর্বপরিকল্পিত অনুযায়ী স্ত্রী লাবনী আক্তারসহ তার স্বজনরা স্বামীর জন্য তাদের পাশের একটি ঘরের মেঝ খুড়ে তৈরি করেন ক’বর। হ’ত্যার পর তার লা’শ পুতে রাখার জন্য সিমেন্ট বালু রাখা হয়। ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ভাষাণচর ইউনিয়নের মুন্সি গ্রামে এ চাঞ্চল্যকর হ:ত্যাচেষ্টার স’ত্যতা পাওয়া যায়। শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে স্ত্রী লাবনী আক্তার (২৮), শাশুড়ি শহিদা বেগম ও দাদি শাশুড়ি জনকী বেগম মিলে তাকে হ’ত্যার পরিকল্পনা করে।
ঠাণ্ডু ঘুমিয়ে পড়লে তাকে হ’ত্যার উদ্দেশ্যে শোয়ার ঘর থেকে ক’বর খুড়া ঘরে নেয়ার সময় তার ঘুম ভেঙে যায়। পরে তাকে হাত-পা বেঁধে জোড় করে পাশের ঘরে নিয়ে গ’লা কে’টে হ’ত্যার চেষ্টা করতে গেলে ঠাণ্ডু চিৎকার শুরু করে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে তাকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রেখে বউসহ অন্যরা সরে যায়। এ ঘটনায় প্রতিবেশীরা ছুটে আসার পর তাদের চিৎকারে আরও এলাকার লোকজন ওই বাড়িতে ছুটে আসে।
ভুক্তভোগী ঠাণ্ডু বেপারী (৩৫) সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের ছলেনামা গ্রামের মিয়াচান বেপারীর ছেলে। তিনি ঢাকায় একটি ওয়ার্কশপ ব্যবসা পরিচালনা করেন। তিনি স্ত্রীর পরিবারকে ১১ লাখ টাকা হাওলাত দিয়েছিলেন বলে ঠাণ্ডুর পরিবারের দাবি।
ঠাণ্ডুর চাচা মো. রমযান আলীর ভাষ্যমতে, শ্বশুর বাড়ির পাশে জমি ক্রয়ের জন্য বায়না করেন ঠাণ্ডু। প্রায় ১১ লাখ টাকা দেয় শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নিকট। শুক্রবার রাতে তিনি ঢাকা থেকে প্রায় সত্তর হাজার টাকা নিয়ে আসেন। তার ইচ্ছা ছিলো শ্বশুর বাড়ি এলাকায় জায়গা কিনে বসত শুরু করবেন।
তিনি আরও জানান, তার টাকা আত্মসাতের জন্য তাকে কৌশলে হ’ত্যা করতে চেয়ে ছিল তারা। আগে থেকেই ঠাণ্ডুর সঙ্গে জমিজমা কেনা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল বলেও জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার রাতে ঠাণ্ডু বেপারীকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হওয়ার পর রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে তার স্ত্রী লাবনী আক্তার, শাশুড়ি শহিদা বেগম ও দাদি শাশুড়ি জনকী বেগম মিলে তাকে কা’স্তে দিয়ে হ’ত্যা চেষ্টা করে। এর আগে পাশের ঘরের বারান্দায় একটি কবর প্রস্তুত করে রাখা হয়। তবে মুখে দড়ি বাঁধা থাকায় গলা পুরোপুরি না কাটায় ঠাণ্ডু বেঁচে যান এবং চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন। ওই রাতেই ঠাণ্ডু বেপারীকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং সদরপুর থানা পুলিশকে খবর দেন তারা।
ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সদরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুকদেব রায়। তিনি জানান, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত হ’ত্যাচেষ্টা। টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যেই এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।