বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কর্তৃক দেশের কওমি ও আলিয়া মাদ্রাসাগুলোতে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চালুর উদ্যোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস।
এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ জাহিদুজ্জামান, সভাপতি পরিষদের সদস্য মাওলানা আবদুল্লাহ আশরাফ ও মাওলানা জাকির হোসাইন বলেন— মাদ্রাসা হচ্ছে দ্বীনি শিক্ষা, নৈতিক মানবগঠন ও আদর্শ নেতৃত্ব তৈরির কেন্দ্র। এখান থেকে দ্বীনের দাওয়াত, সংগ্রাম, জ্ঞান ও চরিত্র গঠনের শিক্ষা দেওয়া হয়। সেখানে ক্রিকেট বা এ ধরনের বিনোদননির্ভর খেলা চালুর প্রচেষ্টা ইসলামী শিক্ষা ও মাদ্রাসার মৌলিক উদ্দেশ্যের পরিপন্থী। খেলাধুলা ইসলাম নিষিদ্ধ করে না, কিন্তু একে শরীরচর্চা ও স্বাস্থ্য রক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। যা মাদ্রাসার মধ্যে চালু রয়েছে।
বর্তমানে খেলাধুলা একটি বাণিজ্যিক ও নৈতিকতাবিমুখ বিনোদন শিল্পে পরিণত হয়েছে— যেখানে জুয়া, বাজি, অশ্লীলতা ও অপসংস্কৃতি যুব সমাজকে বিভ্রান্ত করছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, আজ বিশ্বজুড়ে খেলাকে কেন্দ্র করে জুয়া, অর্থপাচার ও নৈতিক অবক্ষয়ের মহোৎসব চলছে। কোটি কোটি টাকা এই খাতের পেছনে ব্যয় হচ্ছে, অথচ দেশের শিক্ষাখাত, স্বাস্থ্য ও মানবিক সেবায় যথাযথ বিনিয়োগ নেই। এই বিভ্রান্তিমূলক সংস্কৃতি বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি।
তাঁরা আরও বলেন, মাদ্রাসাকে খেলাধুলার আখড়ায় পরিণত করার মাধ্যমে মূলত তরুণ আলেম সমাজের মনোযোগ দ্বীনি শিক্ষার পরিবর্তে জাগতিক বিনোদনের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে— যা একটি পরিকল্পিত সাংস্কৃতিক আগ্রাসন। মাদ্রাসা শিক্ষা বাংলাদেশের জাতীয় ঐতিহ্য ও ইসলামী সংস্কৃতির প্রাণ। এ ব্যবস্থাকে বিনোদনের মাধ্যমে বিকৃত করার অপচেষ্টা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের ওপর সরাসরি আঘাত।
নেতৃবৃন্দ জোর দিয়ে বলেন, মাদ্রাসার ছাত্ররা খেলাধুলার নয়, বরং দ্বীনের ঝান্ডা বহনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। তাই মাদ্রাসার মর্যাদা, পবিত্রতা ও উদ্দেশ্য অক্ষুণ্ণ রাখতে ক্রিকেট চালুর এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায়— দেশের যুব সমাজকে খেলার নামে নৈতিক অবক্ষয়ে না ঠেলে দিয়ে, তাদেরকে আদর্শ, ঈমানদার ও দায়িত্বশীল নেতৃত্বে পরিণত করার উদ্যোগ গ্রহণ করুন।