অমুক যার যার, তমুক সবার ।
এ-জাতীয় কথার মধ্যে একটু সমস্যা লাগে। একটার মধ্যে ‘যার যার’, আরেকটার মধ্যে ‘সবার’, তো এই যার যার কথাটা যে বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকে, ওই বিষয়টাকে একটু ছোট ও কম গুরুত্বপূর্ণ করে দেওয়া হয় ওই বিষয়ের চেয়ে, যেটার সঙ্গে থাকে ‘সবার’। যেমন ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। শব্দ ও বাক্যের ভাব আবহ ও মর্মের দিকে খেয়াল করুন।
বাংলাদেশে এই বাক্যটার ব্যবহার বেশি হচ্ছে গত ১০-১৫ বছর ধরে। আধা সেকুলার সফট-সেকুলার রাষ্ট্র হিসেবে এখন এই স্লোগানটাকে এইদিক-ঐদিকের অনেকেই ব্যবহার করছে। অথচ ‘ধর্ম যার যার’ বলে রাষ্ট্রকে ধর্মনিরপেক্ষ ও সেকুলার দেখানোর ধারাটা উপযোগী ও বেশি গ্রহণযোগ্য হলে এজাতীয় বাক্য ভারতে এবং পশ্চিমের দেশগুলোতে অধিক ব্যবহার হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু সেখানে ঠিক এমন বাক্যের ব্যবহার দেখি না।
যাইহোক রাজনৈতিক অঙ্গনে যেহেতু ব্যবহার হচ্ছে এটার একটা ভাব ও মানসগত প্রভাব নাগরিকদের মধ্যে পড়তেই পারে। ভূগোল, ভূগোল কেন্দ্রিক জাতীয়তা ও এরসঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রকাশ হিসেবে এ-জাতীয় বাক্য যে কারণেই ব্যবহার হয়ে থাকুক, একটি বিষয় মাথায় রাখলে মুসলিমদের জন্য ভালো। সেটি হলো, বিশ্ব পরিমণ্ডল সামনে নিয়ে মুসলিমদের স্লোগান ও অনুভূতি আসলে আরেকটু প্রশস্ত ও বড় হতে হবে; রাষ্ট্র যার যার, ইসলাম সবার।
নির্দিষ্ট দেশ ও ভূগোলের পরিধির মধ্যে যদি বলেন, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার, তাহলে বিশ্ব মুসলিম ও বিশ্ব পরিমণ্ডল সামনে নিয়ে মুসলিমদের স্লোগান হবে, রাষ্ট্র যার যার ইসলাম সবার। বিশ্বজনীন উম্মাহ ভ্রাতৃত্ব ও দ্বীনের সার্বজনীনতা ও গ্রহণযোগ্যতা মুসলিমদের ঈমান ও মৌলিক ধর্মবোধের অপরিহার্য অংশ। এটাও চিন্তায়, আলোচনায়, অনুভূতিতে জাগরুক থাকার জিনিস।
আল্লাহ তাআলা আমাদের দেশ, মজলুম মুসলিম দেশ এবং সারা দুনিয়ার মুসলমানকে হেফাজত করুন, মুক্তি দান করুন এবং উত্তরোত্তর অগ্রসর করুন।